COVID-19 যেভাবে মানুষের মৃত্যু ঘটায়




COVID-19 যেভাবে মানুষের মৃত্যু ঘটায়



Coronavirus disease (Covid-19) একটি সংক্রামক রোগ যা সদ্য আবিষ্কৃত Corona virus দ্বারা সৃষ্টি হয়ে থাকে। করোনাভাইরাসের আবরণের ওপরে কিছু প্রোটিন গজাল (spike) এর মত দাঁড়িয়ে থাকে, তাদের দেখতে সূর্যের উপরিভাগের করোনা আলোকচ্ছটার মত লাগে বলে একে করোনা ভাইরাস নাম দেয়া হয়েছে





GDC illustration of Corona Virus Source - www.statnews.com

Covid-19 সাধারণত নাক, মুখ ও চোখের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এটা কখনই চামড়া ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। যেহেতু আমাদের হাতই বেশিরভাগ সময় আমাদের নাক, মুখ ও চোখের সংস্পর্শে আসে তাই করোনা ভাইরাস এর সংক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বারবার হাত ধোয়ার পরামর্শ দেয়া হয়
Corona Virus আমাদের ভিতরে প্রবেশ করে প্রথমে আমাদের শ্বাসনালীতে কয়েকদিন অবস্থান করে। এরপরে আমাদের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে। শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করার সাথে সাথেই এটি এর স্পাইক এর মাধ্যমে বাহক কোষে অনুপ্রবেশ করে




 
 Medical animation of corona virus . Source - google.
বাহক কোষে অনুপ্রবেশ করার জন্য করোনা ভাইরাস হয়তো তার আবরণকে বাহক কোষের আবরণের সঙ্গে বিলীন করে দেয়। আবরণ মুক্ত হয়ে কোষ সাইটোপ্লাজমে প্রবেশ করে ভাইরাসটি তার RNA দিয়ে কোষের রাইবোসোমকে (Ribosome) ব্যবহার করে অনুলিপি (Replication) তৈরি করে অনেক নতুন ভাইরাস সৃষ্টি করে


 

Replication of Corona Virus . Source - wikipedia


এই অসংখ্য Corona Virus মানুষের ফুসফুসে সুস্থ কোষগুলোকে আক্রমণ করে। এতে ফুসফুসে প্রদাহ তৈরি করে এবং ব্যক্তি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়া ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগের নাম। ফুসফুসে অসংখ্য সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম রক্তজালক পরিবেষ্টিত বায়ু প্রকোষ্ঠ থাকে। এদের অ্যাল্ভেওলি বলা হয়। এই অ্যালভেওলির মাধ্যমেই রক্তে অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড শরীরের বাইরে বের হয়ে আসে৷ করোনা ভাইরাসের আক্রমনে তৈরি হওয়া প্রদাহের ফলে অ্যাল্ভেওলিতে তরল পদার্থ জমা হতে থাকে।



Lungs diagram . Source -www.webMD.com

এই প্রদাহজনক তরল পদার্থ ফুসফুসের অ্যালভিওলাইগুলোকে পূর্ণ করে ফেলে এবং অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড আদান-প্রদান ব্যাহত করে। এর ফলে শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় আমাদের রক্তে অক্সিজেনের অভাব তৈরি হয়কিডনি/লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের (Organ) জন্য প্রচুর অক্সিজেনযুক্ত রক্তের প্রয়োজন হয়। ফুসফুস ভাইরাসের আক্রমণের কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের যোগান দিতে পারে না। ফলে এসব অঙ্গে অসংগতি দেখা দেয়৷ World health organisation(WHO) জানিয়েছে, বেশিরভাগ COVID-19 এর মৃত্যু বহুঅঙ্গ ব্যর্থতার (Multiple organ failure) কারণে ঘটে থাকে৷
আশার কথা হচ্ছে আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারে। WHO এর তথ্যমতে ৮০% Corona virus এ আক্রান্ত ব্যাক্তির তেমন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল ( শিশু, বৃদ্ধ বা ধুমপায়ী ব্যক্তি) অথবা আগে থেকেই যারা শ্বাসকষ্টের মতো রোগে ভুগছে তাদের মৃত্যুহার তুলনামূলক বেশি




COVID-19 mortality rate by age . Source - chinese center for desease control and prevention

ধারণা করা হয়, এটি বাতাসে তুলনামূলক কম ছড়ায়। সরাসরি সংস্পর্শে এটি সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। তাই যতোদিন পর্যন্ত এর কোনো ভ্যাকসিন না আসছে, ততোদিন পর্যন্ত সরকারের নির্দেশ মোতাবেক সামাজিক বিচ্ছিন্নতা (যদিও বিষয়টি সামাজিক না, শারীরিক) মেনে চলুন। Stay home, Stay safe.

No comments

Theme images by fpm. Powered by Blogger.